হাওজা নিউজ এজেন্সি বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ২- হজরত ইবরাহিম (আঃ) যখন পুত্র হজরত ইসমাইল (আঃ)-কে কোরবানি করতে নিয়েছিলেন। যখন হজরত ইবরাহিম (আঃ) হজরত ইসমাইল (আঃ) কে হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় কোরবানি করতে তৈরী হলেন, তখন তার হাত থেমে গেল, পুত্র গর্দান ঝুকিয়ে দিলেন এবং সানন্দে ভাবতে লাগলেন।
কখন কোরবানি হবেন। হজরত ইবরাহিম (আঃ)-এর হাতের শক্তি লোপ পেয়ে গেল। ভাবতে লাগলেন, কোরবানি করতে পারছি না কেন? আমার সবচেয়ে বেশী মহব্বতের বস্তুই তো কোরবান করা আল্লাহর আদেশ।
এ দুনিয়ায় পুত্র ইসমাইলের চেয়ে বেশী মহব্বতের তো আমার আর কিছু নেই। আমার হাত কেন উঠছে না? ছুরিকে কি কেউ ধরে রাখল? না আমার মধ্যে কি মহব্বত এসে গেল? নিশ্চয়ই মহব্বত আসে নাই। তা আসলে অবশ্যই আমার হৃদয় কাঁপত, চক্ষুতে জল আসত। তার কোনটাই আমার মধ্যে আসে নাই।
আচ্ছা আবার চেষ্টা করব, আবার ছুরি চালাব এবং দেখব কে আমার হাতের শক্তি কেড়ে নেয়। হযরত ইবাহিমের যে হাতে ছুরি ছিল, হঠাৎ সে হাতে টের পেলেন যে, তা পাথরের মত ভারী হয়ে গেছে। হাতের শক্তি কে যেন কেড়ে নিয়েছে। ছুরি বলল, 'হে ইবরাহিম (আঃ) আমার কোন দোষ নাই, আমি কি করব। এ তোমার আল্লাহর হুকুম। হজরত ইবরাহিম (আঃ) রাগ করে ছুরি ফেলে দিলেন।
ছুরি বলতে লাগল, 'ইয়া খলিলুল্লাহ আমার উপর কেন রাগ করছেন? আপনার আরজু/বাসনা যে ইসমাইলকে কোরবানি করবেন এবং এটা আল্লাহর হুকুম। কিন্তু এও আল্লাহর হুকুম যে আমি আপনার হুকুম এনকার করা (হুকুম রদ করা)। আমি বলি আল্লাহ্ পাকের যা হুকুম তাই হয়েছে, এতে আমার কি দোষ?'
হযরত ইবরাহিম (আঃ) হয়রান, পেরেশান হয়ে গেলেন। হঠাৎ টের পেলেন পানির মত কি যেন উনার কদম মোবারকে লাগছে। চক্ষু খুলে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। সত্যই কি দেখছেন, না স্বপ্ন? হযরত ইসমাইল (আঃ) দাঁড়িয়ে আছেন, এদিকে একটি দুম্বা কোরবানী হয়ে গেছে। হতভম্ব, বেহুস-বেকারার হয়ে হজরত ইবরাহিম (আঃ) কাঁদতে লাগলেন ও ফরিয়াদ করতে লাগলেন, 'এ্যায় পাক পরওয়ারদেগার, কেন আমার কোরবানি কবুল করলেন না? কাঁদতে কাঁদতে বেহুশ হেয়ে পড়লেন। তখনই আল্লাহপাকের আদেশ আসল, 'হে ইব্রাহিম তুমি কেঁদোনা,তোমার ছেলেকে কোরবানি করতে পারো নাই, কিন্তু আমি তোমাকে এর চেয়েও বড় ও মহান এক কোরবানি দান করলাম।' হজরত ইবরাহিমের বেকারারী দূর হয়ে হুশ আসল ও শুনতে পেলেন, 'এ্যায় খলিল, তুমি বল যে মোহাম্মদ (দঃ) কি সবচেয়ে বেশী আজিজ (সম্মানিত) নয় ...?'চলবে…
সংকলন- রাসেল আহমেদ রিজভী